দেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আজ (রোববার) রাজধানীসহ সারাদেশে “থালা হাতে ভূখা মিছিল” কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা সরকারি প্রজ্ঞাপনে মাত্র ৫% বাড়িভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল এবং ন্যায্য বেতনভাতা বৃদ্ধির দাবি তুলেছেন।
জয়পাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পক্ষ থেকে এই মিছিলে সহকারী অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, সহকারী অধ্যাপক রাইসুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক হোসনে মোবারক, প্রভাষক আব্দুল আহাদ, মিরাজ হোসেন, সলিমুল্লাহসহ অনেকে অংশগ্রহণ করেন।মিছিলে শিক্ষক-কর্মচারীরা হাতে হাতে খালি থালা ও বাটি নিয়ে সরকারের প্রতি তাদের দুরবস্থার ছবি তুলে ধরেন। তারা জানান, বর্তমান ৫% বাড়িভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন তাদের অর্থনৈতিক সংকট মেটাতে যথেষ্ট নয়। সরকারের কাছে তারা ২০% বাড়িভাড়া, ১,৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং উৎসব ভাতা ৭৫% করার দাবি জানিয়েছেন।এ বিষয়ে জানতে চাইলে – “স্বাধীনতা টিভি “ও “বাণিজ্য জগৎ” এর সংবাদ প্রতিনিধিকে উক্ত আন্দোলনের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজি বলেন, “আমরা এই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলছি, জাতির মেরুদণ্ড শক্ত করছি — অথচ নিজের জীবনে নিরাপত্তা ও স্বীকৃতির নিশ্চয়তা পাই না। বছরের পর বছর ধরে প্রতিশ্রুতি শুনেছি, কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। এখন খালি থালা হাতে রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।”জয়পাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন,”আমরা দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে সুষম ও গতিশীল করতে কাজ করছি, কিন্তু নিজেদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত। আমরা শিক্ষকের মর্যাদা চাই, ন্যায্য জীবন চাই।অন্যদিকে, সহকারী অধ্যাপক রাইসুল ইসলাম বলেন, “ভর্তি ফি, বিদ্যুতের বিল, বাসভাড়া—সবকিছুই বাড়ছে। কিন্তু আমাদের বেতন-ভাতা স্থির থেকে গেছে। এই অবস্থা চলতে পারে না।প্রভাষক আব্দুল আহাদ বলেন, “অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় আমরা পড়েছি, কিন্তু শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সরকারের প্রতি আমাদের আবেদন, আমাদের দাবি মেনে নিন।মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায়সঙ্গত বেতন, ভাতা ও সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তাদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা।কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক–কর্মচারীরা খালি থালা ও বাটি হাতে নিয়ে প্রতিবাদ করেন। প্রতীক হিসেবে “খালি থালা” দেখিয়ে দেয়া হবে তাঁদের “ভোগান্তি ও অব্যাহত বঞ্চনার মর্ম।পূর্ব কর্মসূচিতে তারা কালো পতাকা মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি ও পাঠদান বন্ধ রাখার কর্মসূচিও নিয়েছেন। শিক্ষা শুধু পাঠদান নয়, এটি একটি জাতি গঠনের দায়িত্ব। আর সেই জাতি গঠনের কারিগর যদি বারবার বঞ্চনার শিকার হন, তাহলে দেশকেই তার মূল্য দিতে হয়। জয়পাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ দেশের প্রতিটি শিক্ষক আজ শুধু নিজের অধিকারের জন্য নয়, বরং শিক্ষাব্যবস্থার ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য রাস্তায় নেমেছেন। এই আওয়াজ যেন অনুকরণ নয়, পরিবর্তনের আহ্বান হয়।



										
										
										
										
										
										
									
									
									
									
									
									
									
									
									
									
									
									
									