মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১২:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
পটুয়াখালীর গলাচিপায় যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল। কোনাবাড়ীতে নকল সিগারেটসহ গ্রেফতার-১ পটুয়াখালী গলাচিপায় ছুরিকাঘাতে তিনজন আহত, ১জন ঢাকা রেফার ! কালিয়াকৈরে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার গলাচিপায় টেকসই বেড়িবাঁধ এর অভাবে আন্তঃজেলা যোগাযোগ বন্ধ ; ঝুকিপূর্ণ জনজীবন ! তৃতীয়বার সময় বৃদ্ধির পরও পার্বতীপুরের মোস্তফাপুরে ৭ বছরেও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ! গলাচিপায় বিএনপি’র নবনির্বাচিত কমিটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত সিএমপি’র বাকলিয়া থানা পুলিশের অভিযানে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি গ্রেফতার কালিয়াকৈরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গ্রেফতার
বিজ্ঞপ্তি
গরমে হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার রোগী
/ ৫৬৪ Time View
Update : শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০২২, ৪:২৯ পূর্বাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিন ১২ শতাধিক রোগী আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। হঠাৎ করে গরম বেড়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে মনে করছেন আইসিডিডিআর,বির বিজ্ঞানীরা। চলতি বছরে তিন সপ্তাহ আগে থেকেই ডায়রিয়ার প্রকোপ শুরু হয়। সংখ্যার দিক থেকেও যা দেড়গুণ বেশি। রোগীর চাপ সামলাতে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত আইসিডিডিআর,বি হাসপাতালে তাঁবু টানিয়ে একশ শয্যা বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে আরও ষাট শয্যা আজ শুক্রবার বাড়ানো হবে। রোগীদের মধ্যে ৩০ শতাংশই অজ্ঞান অবস্থায় ভর্তি হচ্ছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত আইসিডিডিআর,বির হাসপাতালে ৪২১ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়। একঘণ্টায় পর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫০২ জনে। বুধবার ২৪ ঘণ্টায় এই হাসপাতালে ভর্তি হয় ১২৩৩ জন। আগের দিন মঙ্গলবার এ সংখ্যা ছিল ১২৭২ জন।
আইসিডিডিআর,বির ডায়রিয়া বিভাগের প্রধান বাহারুল আলম বলেন, প্রত্যেক বছরে গরমে কলেরার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। এমনিতে প্রতিদিন এখানে ৩৫০ থেকে ৪০০ রোগী ভর্তি থাকে। কিন্তু এ বছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাতশ থেকে আটশতে। ১৫ মার্চের পরে রোগী হাজারের ঘর অতিক্রম করে। তিনি বলেন, ডায়রিয়া হলে পানিশূন্যতা বৃদ্ধি পায়। তীব্র পানিশূ্যতার কারণে অনেক রোগী ভর্তি হয়। তবে এখন পর্যন্ত ডায়রিয়ায় কেউ মারা যায়নি। আক্রান্তদের মধ্যে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ও বয়স্ক রোগী বেশি। যারা বাইরের খাবার বেশি গ্রহণ করেন তারাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
গতকাল দুপুরে আইসিডিডিআর,বিতে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ৪৬৮ শয্যা আগেই পূর্ণ হয়েছে। তাঁবু টানিয়ে বাড়ানো একশ শয্যায়ও রোগী ভর্তি রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে নতুন রোগীর ভিড় বাড়ছে। হাসপাতালের ভেতরে ও বর্ধিতাংশে হাত মাইকে কিছুক্ষণ পরপর স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিবার পায়খানার পরে এক গ্লাস করে স্যালাইন, কলা, চিড়াসহ পুষ্টিসম্মত খাবার খাওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছেন।

হাসপাতালের বেডে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে দেড় বছরের শিশু আফরান। পাশেই মা হালিমা কাদছেন। তিনি জানান, হঠাৎ করে আফরানের বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। গতকাল সকালে টঙ্গী থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। যানজটের কারণে রাস্তায় আফরানের অবস্থা বেশি খারাপ হয়েছিল। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, প্রচণ্ড ডিহাইড্রেশন নিয়ে শিশুটিকে আনা হয়েছিল। আনার পরই তাকে স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। এখন অনেকটা ভালো আছে।

রাজধানীর ইস্কাটন থেকে রাত ১টায় হাসপাতালে আসেন নাসিরউদ্দিন। এ এলাকায় গত ক’দিন থেকেই পানির প্রচণ্ড সংকট। ওয়াসার পানিতে ময়লা আর উৎকট গন্ধ। ফুটানোর পরও দুর্গন্ধ যায় না। তিনি বলেন, সেই পানি পান করেই তার ডায়রিয়া হয়েছে। দুপুরের পর থেকে অবস্থা খারাপ হলে রাতেই হাসপাতালে চলে আসেন।
রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সিফাত হোসেন। কুমিল্লায় বিভাগের ফিল্ডওয়ার্ক থেকে ফিরেই অসুস্থ হন। ডায়রিয়া আর বমি শুরু হলে গতকাল সকালে হাসপাতালে চলে আসেন।

আইসিডিডিআর,বির সিনিয়র ফিজিশিয়ান ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, আক্রান্ত রোগীর ৮০ শতাংশ বয়স্ক। গরমে কলেরায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। আক্রান্ত রোগীর ১২ শতাংশ কলেরায় আক্রান্ত। বড়দের মধ্যে ২৩ শতাংশ এবং শিশুদের (৫ বছরের নিচে) ৪ শতাংশ। ইকলাই ভাইরাসেও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। এ ভাইরাসে বড়রা ২৫ শতাংশ এবং শিশু (৫ বছরের নিচে) ১০ শতাংশ আক্রান্ত।

তিনি বলেন, গরমের সময়ে মানুষ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি পান করে। ময়লা পানিতে ডায়রিয়ার জীবাণু থাকে। সেই পানি পান করেই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। যাদের কম সমস্যা তাদের বাড়িতেই চিকিৎসা নিলেই হবে। প্রত্যেকবার পায়খানার পরে দুই বছরের নিচের শিশুদের ১৫ চা চামচ স্যালাইন (৭৫ মিগ্রা), দুই থেকে ১০ বছরের শিশুদের ৩০ চা চামচ স্যালাইন (১৫০ মিগ্রা) এবং বয়স্কদের ২৫০ মিগ্রা স্যালাইন খাওয়াতে হবে। তাহলে শরীরে পানির স্বল্পতা হবে না। তীব্রমাত্রায় পানিশূন্যতা সৃষ্টি হলে রোগী অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে কিডনিও অকেজো হতে পারে।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page